জবা ফুলের জন্ম ও প্রকারভেদঃ-(Birth and types of jaba flowers)-জবাফুরের গাছ বহু শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট একটি গুল্ম জাতীয় ফুলগাছ। এ ফুলের গাছটি বর্তমানে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে পাওয়া গেলেও মুলত এটি আমাদের দেশীয় ফুল নয়। উদ্ভিদ গবেষকদের মতামত ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়-মূলত এ ফুল গাছটির জন্ম চীনদেশে। বর্তমানে এ ফুল গাছ শুধু চীন বা বাংলাদেশেই নয়, মধ্য প্রাচ্যেও দেশ গুলোতেও হর-হামেশায় দেখা মেলে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ ধরনের জবা দেখতে পাওয়া যায়, এরমধ্যে ঝুমকো ও লঙ্কা জবা অন্যতম। এ ফুলটি লাল, সাদা, পাটকিলে, গোলাপি, হলুদ, কমলা, নীলচে ও নীলচে-বেগুনিসহ মিশ্র বর্ণেরও জবা দেখতে পাওয়া যায়।
জবা ফুল গন্ধহীন হলেও নানান ঔষধি গুনে ভরপুরঃ-(Although jaba flower is odorless, it is full of various medicinal properties)-বাহারী রঙ্গের এ মন মুগ্ধকর ফুলটি গন্ধহীন হলোও নানান জটিল ও কঠিন রোগ নিরাময়ে এর জুড়িমেলা ভার। এটি নিঃসন্দেহে একটি অতুলনীয় ঔষধি ফুল গাছ। আদিকাল থেকেই কবিরাজি মতে ও আয়ুবের্দীক শাস্ত্রে রোগ নিরাময়ে এর ব্যবহার চলে আসছে। বর্তমানে এটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতেও গবেষনা পূর্বক রোগ নিরাময়ে এ্যলোপ্যাথিক, ইউনানি, হারবাল ও হোমিওপ্যাথিক শাস্ত্রে রোগ নিরাময়ে এর ব্যবহার আসংখাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লিখিত চিকিৎসা শাস্ত্র পর্যালোচনায় জানা যায়-এটির ব্যবহারে নি¤œলিখিত রোগ সমুহ অনায়াসে নিরাময় সম্ভব-(১) চুল, দাড়ি, গোফ ও চোখের ভ্রæ পাতলা হলে জবাফুল বেটে নিয়মিত লাগালে আশ্চার্য্যজনক ফল পাওয়া যাবে। (২) শরীরের চামড়া উঠা রোগসহ যে কোন চর্মরোগে এ ফুলের রস লাগালে অসম্ভব ফল পাওয়া যায়। (৩) অতিরিক্ত আহারে অস্বস্তি ও অতিরিক্ত বমি বমি ভাব দেখা দিলে ৪-৫টি জবাফুল বেটে শরবত খেলে দ্রæত আরোগ্যলাভ হয়। (৪) ডায়াবেটিস জনিত মাত্রাতিরিক্ত প্রসাব হলে কয়েকদিন নিয়মিত জবাফুলের গাছের ছাল বেটে বেলা ১ চা চামুচ করে বেলা খেলে দ্রুত মাত্রাতিরিক্ত প্রসাব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। (৫) চোখেঁ কোন প্রকার সংক্রমন হলে জাবাফুলের রস ২-৩দিন কয়েক ফোটা করে লাগালে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়। (৬) মেয়েদের অনিয়মিত মাসিকের ক্ষেত্রে ২-৩টি পঞ্চমূখি জবাফুলের কুড়ি বেটে শরবত কওে কয়েকদিন খেলে দ্রুত তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। (৭) ঠান্ডাজনিত জ¦র হলে কয়েকটি জবাফুলের পাতা সিদ্ধ করে চা তৈরী করে কয়েকবার পান করলে দ্রæত তা নিয়ন্ত্রন হবে। (৮) সাদা জবার পাপড়ি সিদ্ধ করে সেই পানি পান করলে বিষন্নতা দুর হয়। (৯) লাল জবার সিদ্ধ পানি খেলে শরীরের অতিরিক্ত লৌহজনিত ঘাটতি কমায়। (১০) জবাফুলের পেষ্ট তৈরী করে মাথার তালুতে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল পাকা রোধ করা সম্ভব, এতে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম থাকায় মাথার ত্বকের পুষ্টিসহ চুলের গোড়া মজবুত ও সতেজ হওয়াসহ খুশকি রোধে খুবই কার্যকারি ভুমিকা রাখে। জবাফুল ঔষধের উপকরন হিসেবে অবশ্যই ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে, সেই সাথে ইহা সংরক্ষনের জন্য ফ্রিজ ব্যবহার করতে হবে।
জবাফুলের বানিজ্যিক চাষৎ-(Commercial cultivation of jaba flower)-জবাফুরের গাছ বিশেষ করে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় ও অন্যান্য ধর্মীয় বংশীও পরিবার গুলোতে শোভাবর্ধণের জন্য দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমানে ইহার ছাহিদা ও গুরুত্বেও কারনে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কিছু কিছু নার্সারিতে বানিজ্যিকভাবে জবাফুলের চাষ করা হচ্ছে। যা বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানিতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আবার অনেক ঔষধ কোম্পানি রয়েছে-তারা নিজেরাই নিজস্ব বাগানেই জবাফুলের চাষ করছেন।
লেখক/Author
2 comments:
অনেক কিছু জানা হলো
লেখাটি অনেক উপকারে আসবে।
Post a Comment