Amitab Bdbangla Blog
Follow the blog regularly to learn more about education, health-culture, technology, entertainment, agricultural information, humanity, empathy, welfare, entrepreneurship, nature, people and biodiversity.
Monday, February 14, 2022
তেঁতুল গাছ (Tamarind tree) প্রায় বিলুপ্তির পথে !!
Monday, January 24, 2022
খেজুর গাছ (Palm/date trees) হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি থেকে !
ভূমিকা-(Introduction)- প্রকৃতির অনন্য ঐতিহ্য দেশী বা জংলী খেজুরের গাছ কালের বিবর্তনে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতির মানচিত্র থেকে। গ্রামীন জনপদের রাস্তাঘাটের অপরুপ শোভাবর্ধণ কারি এ গাছটি শুধু কি শোভা বর্ধণ করতো ? না এটি শীতকালে গ্রামীন অর্থনীতিতে যৎসামান্য অর্থনৈতিক ভূমিকাসহ চাহিদা মেটায় অতুলনীয় স্বাদের রস এবং মূল্যবান খেজুর গুড়ের। কয়েক বছর আগেই গ্রাম বাংলার মেঠো পথের দু ধারে অহরহ সারিবদ্ধ ভাবে শোভা পেত দৃষ্টিনন্দন এ গাছটি। বর্তমানে তা খুজে পাওয়া দায়, তবে কিছু এলাকায় গাছ প্রেমি মানুষের উদ্দেগে দু-একটি এলাকায় নতুন করে শোভা পেতে দেখা যাচ্ছে এ গাছটিকে।
খেজুর গাছের বিবরন-(Description of date/palm tree)-বাংলাদেশে সাধারনত খেজুর গাছ সাধারনত দু-ধরনের দেখতে পাওয়া যায়- (১) দেশী বা জংলী খেজুর (Desi or wild dates) , (২) আরবি বা সৌদি খেজুর (Arabic or Saudi dates)। উদ্ভিদ তথ্য গ্রন্থাগার থেকে জানা যায় খেজুর গাছ এ্যারিকেসি গনভুক্ত (The Phoenix genus of the Ericaceae family)। বিশ্বে মোট ১৪ প্রজাতীর এ ধরনের গাছ রয়েছে। এ সবের মধ্যে দেশী বা জংলী এবং সৌদি খেজুর এ দু ধরনের খেজুর গাছেই রস ও সুস্বাদু ফলের জন্য বিখ্যাত। এটি একটি এক জীব পত্রী বা একলিঙ্গ বিশিষ্ট বৃক্ষ। দেশী খেজুর বেশ দ্রুত বর্ধনশীল শাখাবিহীন এক কান্ড বিশিষ্ট গাছ। এটি নারিকেল, তাল, সুপারী গাছের ন্যায় জন্মে, গ্রীষ্মকালে এর ফল পাওয়া যায়।
জন্ম ও উৎপত্তি -(Birth and origin)-বংলাদেশের সবে এলাকাতেই জন্মে দেশী বা জংলী খেজুর গাছ। ইহা ছাড়া এটি বিশেষ করে হিমালয়ের পশ্চিোংশ থেকে পূর্ব এশিয়ার ভারতবর্ষ, নেপাল ও মিয়ানমারের আবহাওয়া বিশেষ উপযেগি। বাংলাদেশের বিখ্যাত সুন্দর বনসহ উপকূলীয় অঞ্চল গুলোতে দেখা যায় এর বংশবিস্তার। প্রধানত প্রাকৃতিক ভাবেই এ দেশী খেজুরগাছ জন্মে থাকে, মূলত কাঠবিড়ালী ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখিরাই এর বিস্তারক।
বাংলাদেশের গ্রামীন অর্থনীতি ও প্রকৃতিতে দেশী খেজুরের গুরুত্ব-(The importance of native dates in the rural economy and nature of Bangladesh)- বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে সৌদি খেজুরের চাষ হলেও দেশী বা জংলী খেজুরের বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়না। তবে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও গ্রামীন অর্থনৈতিতে প্রাচীনকাল থেকেই দেশী খেজুরের গাছ যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে আসছে। এ দেশের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের গাছী সম্প্রদায় অর্থাৎ (যারা খেজুর গাছ খেখক রস সংগ্রহ করে তাদেরকেই বলা হয় গাছী )। শীত মৌসুমে খেজুুরের রস সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। সেই সংগ্রহকৃত রস প্রতিদিন প্রত্যুষে ভোর বেলা খেকে সকাল ১০টার মধ্যে গ্রামে গ্রামে অথবা গ্রামাঞ্চলের হা-বাজার গুলোতে কলস বা হাড়ি ভরে ভারে করে কেজী বা গ্লাস দরে বিক্রি করে থাকে। এ রস অত্যান্ত সুস্বাদু ও জনপ্রিয়। শীতের সকালে খেজুর রস পান না করলে অনেকের চলবেই না। টাটকা রস বিক্রির পর অবিক্রিত রসদিয়ে গাছীরােই তৈরী করেন খেজুর গুর। এই গাছী সম্প্রদায়ের লোকজনই গ্রামাঞ্চলের রাস্তার দুপার্শে সারিবদ্ধ ভাবে খেজুর গাছ লাগিয়ে থাকেন। পাশাপাশী কিছু গাছ প্রেমী মানুষও অনেক ক্ষেত্রে পতিত জমিসহ জমির আইলে এ গাছ লাগিয়ে থাকেন।
খেজুর গুড়ের বাহারী খাদ্য তালিকা-(External food list of date molasses)-খেজুর রসের গুড় দিয়ে এ দেশের বাঙ্গালীদের জন্য শত শত বছর ধরে বাহারী সুস্বাদু খাবারের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। আখের গুড় ১শত ২০ থেকে ৫গ টকা কেজী বিক্রি হলেও খেজুর গুড় বিক্রি হয় ২শত ৫০ থেকে ৩শত টাকা। খেজুর গুড়দিয়ে বিভিন্ন নামীদামী মিস্টির দোকানে তৈরী করা হয়-উচ্চ মূল্যের রসগোল্লা, জিলাপি, সন্দেস, খেজুর গুড়ছানা, খেজুর গুড়মিঠাই, পিঠা-পায়েস ইত্যাদি। শুধু কি তাই ? এ দেশে বসবাস রত বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায় বা গোষ্টি খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করে থাকেন-উচ্চ মূল্যের চোলাই মদসহ বিয়ার ।
খেজুর গাছের গৃহস্থলি ব্যবহার-(Household use of date palms)-থেজুর গাছ দিয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষ প্রাচীন কাল থেকে ঘরের বর্গা, ঘরের ছাদের বিছানিসহ ছোট খাল বা নালা পারাপারের জন্য মানুষ ও মালামাল বহনকারি ঠেলাগাড়ী পারাপারের জন্য খেজুর গাছের গুল ব্যবহার করা হত। বর্তমানে এ গাছের গুল অত্যান্ত মজবুত হওয়ায় টিনের ঘরের মুল্যবান রুয়া, বাতা হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এ গাছের গাছের কাঠের বৈশিষ্ট সহজে ঘুন পোকা আক্রমন করতে পারেনা। ইহাছাড়াও খেজুর গাছের পাতা দিয়ে গ্রামাঞ্চলে পাটি, মাদুর, ঝুড়ি, হাতব্যাগ, ফুলদানিসহ ইত্যাদি কারুপন্য তৈরি করা হয়।
খেজুর গাছ বিলুুপ্তের কারন-(The reason for the extinction of native date palms)-প্রাচীন কাল থেকে শহর খেকে শুরু করে প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের রাস্তার দুধারে পুকুর পাড়ে, পতিত জমি, জমির আইলে, বাড়ীর উঠানসহ অহরহ শোভা পাইত এই প্রকৃতির শোভা বর্ধনকারি খেজুর গাছ। কিন্তু বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও রাস্তা ঘাটের উন্নয়নের যাতাকলে রাস্তা প্রসস্ত করন সহ ব্যাপক হারে বাসাবাড়ী নির্মানে জায়গার সংকুলানে এ সমস্ত গাছ কেটে ফেলতে হয়েছে। কিন্তু নতুন করে আর এ গাছ লগোনো হয়নি। পাশাপাশি ইট ভাটায় খড়ির চাহিদা মেটাতেও এর ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দিন দিন বিলুপ্ত হতে বসেছে এ খেজুর গাছ।
বাংলাদেশে খেরর রস ও খেজুর গুড় উৎপানের বিখ্যাত এলাকা সমুহ-(Famous areas for production of Kherr juice and date molasses in Bangladesh)- এ দেশের জলবায়ুর কারনে বাংলাদেশের বিষেশ করে ফরিদপুর, নাটোর, রাজশাহী ও যশোর জেলায় তুলনামুলক ভাবে বেশী দেখা যায় এ গাছটিকে। বাংলাদেশ কৃষি সমপ্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়- ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি ভাবে উদ্যোগ নিয়ে দেশী খেজুর গাছ সংরক্ষন ও সম্প্রসারনে উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।
উপসংহার (Conclusion)(Conclusion)-দেশের সচেতন মহল ও পরিবেশ বাদিরা বিভিন্ন মতবাদে এ গাছটিকে সংরক্ষনে সরকারি ভাবে জোড়ালো পদক্ষেপ গ্রহন করে শুধুমাত্র দেশের গ্রামীন রাস্তা গুলোর দুধারে শারিবব্ধ ভাবে চারা রোপনের উদ্যাগ নিলে খেজুর গুড়ের দেশর চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে এ সুস্বাদু গুড় রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব।
লেখক/Author
সাংবাদিক অমিতাব বর্মণ।
ভেন্ডাবাড়ী, পীরগঞ্জ-রংপুর।
বাংলাদেশ।
Sunday, January 9, 2022
লাউচাষ (Gourd cultivation) করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব !!
ভুমিকা-(Introduction)বাংলাদেশের কৃষিতে কৃষকদের মাঝে লাউচাষ ধীরে ধীরে অত্যান্ত জনপ্রিয় ও অর্থকারি ফসলের তালিকায় চলে আসছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বানিজ্যিক ভাবে শত শত একর জমিতে হচ্ছে লাউচাষ। অল্প পুজিঁ বিনিয়োগ ও স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা হওয়ায় শীত কালিন জনপ্রিয় এই সব্জীটি চাষাবাদে ঝুকছেন কৃষক। বাণিজ্যিক ভাবে লাউচাষ করে শুধু কৃষক গন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীই নয়, এ সব্জীটির রয়েছে অসংখ্য পুষ্টি ও ঔষধি গুন। মজার ব্যাপার হচ্ছে এটি বাংঙ্গালীদের হরেক রকম খাবার ও রান্নার তালিকায় জনপ্রিয় একটি সব্জি। বাজারে এর চাহিদাও রয়ছে প্রচুর। বিভিন্ন প্রকারের রান্নায় এর রয়েছে বাহারি রকমের স্বাদ। বাংলাদেশ সরকারের কৃষি অধিদপ্তর ও কৃষি গবেষণা মুলক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আরও নতুন নতুন উন্নত জাতের হাইব্রিড জাতের উচ্চ ফলনশীল লাউ উদ্ভাবনে কাজ করা সহ কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে কৃষকদের কল্যাণে কৃষি প্রনোদনা ও পরামর্শ সেবা প্রদান করে আসছে।
Sunday, January 2, 2022
About Me
I am journalist Amitab Bormon-(amitabbdbangla.blogspot.com)-Through this blog, I would like to highlight the right direction of healthcare through human nature, lost heritage, ethnic and religious practices, education, culture, agro-economy, technology, entrepreneurship , humanity, achievements, creative discoveries and the unique qualities of plant life. In this case, I hope to follow the blog with all your suggestions, prayers. Good luck
to all.
Saturday, December 25, 2021
আকন্দ গাছের (Akand tree) রয়েছে অফুরান্ত ভোজষ/ঔষধি গুন !!
আকন্দ গাছের গঠন ও আকৃতিঃ- (Structure and shape of Akanda tree)- এ গাছটি ৮-১০ ফুট উচু হয়ে থাকে। সাধারনত আকন্দ। শ্বেত আকন্দের ফুলের রং সাদা এবং লাল আকন্দের ফুলের রং বেগুনি হয়ে থাকে। গাছের ছালের রং ধূসর বর্নের হয়ে থাকে,এর পাতা ৬-৮ইঞ্চি লম্বা হয়। এর শাখা প্রশাখা ভেঙ্গে গেলে ধুধের ন্যায় সাদা আঠা বের হয়। এ গাছে ফুল ফুঠলে দেখতে অপরুপ লাগে, ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্য এ গাছে ফুল ফোটে এবং জুনের মাঝা-মাঝিতে ফল হয়। আগষ্ট থেকে নভেম্বরের মধ্য এর ফল পেকে যায়।
আকন্দ গাছের ব্যবহারঃ-(Use of Akand tree)- বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ ও ভোজষ শাস্ত্র থেকে জানা যায়-প্রাচীনকালে গ্রামাঞ্চলের বৈদ্য/কবিরাজ গন আকন্দের গাছের ছাল, আঠা, শেকড় ও পাতাদিয়ে বেশকিছু জটিল এবং কঠিন রোগের উৎকৃষ্ট মানের চিকিৎসা দেয়াহত। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আয়ুর্বেদীক ও ইউনানী শাস্ত্রে এর ব্যবহার ব্যপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আকন্দ গাছ বানিজ্যিক ভাবে চাষঃ-(Akand trees are cultivated commercially)- বাংলাদেশ কৃষি ও উদ্ভিদ গবেশনা দপ্তরের সূত্রমতে জানা যায়-বর্তমানে দেশের বেশ কয়েকটি আয়ুর্বেদীক ও ইউনানি ঔষধ কোম্পানী নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিজস্ব জমিতে বানিজ্যিক ভাবে আকন্দ গাছের চাষাবাদ শুরু করেছেন। সেই সাথে সাধারন কৃষকদেরও এটি বানিজ্যিক ভাবে চাষাবাতদর জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন। তবে কিছু কিছু নার্সারিতে ইতিমধ্যে বানিজ্যিক চাষাবাদ শুরু করেছে। এটি বানিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ করলে একর প্রতি ১লক্ষ থেকে ১লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। কারন বর্তমানে ঔষধ কোম্পানি গুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
আকন্দ গাছের বীজ ও চাষাবাদঃ-(Akand tree seeds and cultivation-)- অন্যান্য উদ্ভিদ গাছের থেকে আকন্দ গাছের সহসায় দ্রুত বংশ বিস্তার করা সম্ভব। কারন এর শুধু ফল খেকেই বীজ হয় না, এর শেকর, মোথা, সাকা প্রসাকার অংশ থেকেও বংশ বিস্তার করে। ৩-৪ ফিট দুরত্বে এর চারা লাগিয়ে এর চাষ করা যায়। এটি চাষে তেমন কোন রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। এটির ছাল/বাকল, পাতা, আঠা, শেকর, মোথা সব কিছুই ঔষধি।
আকন্দ গাছের প্রাপ্তিস্থানঃ-(Receipt of acacia tree)- আকন্দ গাছ শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারত, চীন, পাকিস্থান, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ফিলিপাইন ও মালোশিয়াতেও দেখতে পাওয়া যায়।
আকন্দ গাছের ঔষধি গুন ও ব্যবহার বিধিঃ-(Medicinal properties and rules of use of Akand tree)- (১) আকন্দ গাছের শিকরের ছাল গুড়াকরে আকন্দের আঠায় ভিজিয়ে ভলেভাবে শুকিয়ে চুরুট বানিয়ে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ঠের অসম্ভব উপকার পাওয়া যায়। (২) ০.৬৫ গ্রাম পরিমান আকন্দের পাতার পোড়াঁছাই পানিতে মিশিয়ে পান করলে গুরুতর এসিডিটি খেকে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়। (৩) আকন্দ গাছের ২০-৩০গ্রাম আঠার সাথে ৩ গ্রাম শুকনো হলুদের গুড়ো মিশিয়ে তুলাদিয়ে নিয়মিত কয়েকদিন ছুঁলি বা মেঁছতায় লাগালে চিরতরের তা ভাল হবে। (৪) শরীরের চুলকানি ও পাচড়ায় পরিমানমত আকন্দের আঠা ও সহপরিমান তিলের তেল এবং হলুদের গুড়োর অর্ধেক পরিমানে মিশিয়ে মলম তৈরি করে নিয়মিত ঘুমানোর আগে লাগালে কয়েকদি লাগালে দ্রুত উপশম পাওয়া যাবে, (৫) কানের ভিতরের ক্ষতজনিত যন্ত্রনায় আকন্দের পাতার দুপাশে পুরোনো ঘি মাখিয়ে তা আগুনে ভালভাবে সেঁকদিয়ে সেই ঘি নিংড়েনিয়ে কানেদিয়ে তুলাদ্বারা কান বন্ধ করে ঘুমানোর আগে দুদিন ব্যবহার করলেই দ্রুত উপশম হবে। (৬) বাতের ব্যাথা ও ফুলা যন্ত্রনায় আকন্দ গাছের আঠার সাথে খাঁটি শরিষার তেল মিশিয়ে মালিশ করলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়। (৭) গৃহ পালিত গরু-ছাগলের গলফুঁলা রোগে আকন্দ পাতা বেটেনিয়ে গলায় লাগিয়ে বালি গরম করে কাপড় দিয়ে ২-৩দিন তাপদিলে গলাফঁলা রোগ দ্রুত সেরে যাবে। (৮) মানুষের শরীরের যে কোন আঘাত জনিত ফুঁলা জখক হলে আকন্দের পাতা দিয়ে তাপদিলে আরোগ্য হবে। (৯) বুকের জমাট বাধা কফ নিঃস্বরনে বুকে ভালভাবে পুরাতন ঘি মালিশ করার পর আকন্দের পাতাদিয়ে ঘন ঘন তাপদিলে কফ গলে দ্রুত বের হবে। (১০) আকন্দ পাতার রস নিয়মিত মাথায় ব্যবহার করলে টাক পড়া রোধসহ খুশকি দুর করে। (১১) দাতের ব্যাথায় আকন্দ পাতার রস তুলাদিয়ে দাতে লাগালে দ্রুত ব্যাথানাশ করে। (১২) আকন্দ পাতার রস ভালভাবে চুলায় ফুটিয়ে ৩-৪ চামুচ লবন দিয়ে খেলে ইহা কৃমিনাশকের কাজ করে। (১৩) আকন্দের শেকর ভালভাবে শুকিয়ে গুড়া করে ২ গ্রাম পরিমান কয়েকদিন নিয়মিত খেলে ক্ষুদামন্দাসহ হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অতুলনীয় ফল হয়। (১৪)পায়ের গোদ হলে আকন্দ গাছের শেকর বেটেনিয়ে নিয়মিত প্রলেপ দিলে আরোগ্য লাভ করা যায়। (১৫) মানুষের শরীরের কাটাছেঁড়া, ক্ষতজনিত ফাঙ্গল থেকে রক্ষা পেতে আকন্দ পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে ক্ষতস্থান পরিস্কার করলে এটি এ্যান্টি-সেপ্টিক হিসেবে কাজ করবে। (১৬) আকন্দের পাতা বেটে মুখের ব্রনে লাগালে দ্রুত ব্রন ফেটে যায়।
উপসংহারঃ-(Conclusion)- মোট কথা আকন্দ গাছকে একজন বাড়ীর অভিজ্ঞ ডাক্তার বলা হয়ে থাকে। এ কারনে প্রাচীন কালে প্রায় প্রতিটি বাড়ীর আশে পাশেই যত্ন সহকোরে আকন্দ গাছের চারা লালন পালন করা হত।
লেখক/Author
সাংবাদিক অমিতাব বর্মণ।
ভেন্ডাবাড়ী, পীরগঞ্জ-রংপুর।
বাংলাদেশ।
২৫/১২/২০২১ইং।
Sunday, December 19, 2021
তালগাছ (Palm trees) বিলুপ্তে শুধু প্রকৃতির ঐতিহ্য নয়, জীববৈচিত্রের প্রাণ শংসয়ও বটে !!
Monday, December 13, 2021
জবাফুল (Jaba flowers) শুধু শোভাবর্ধনে নয়, নানা ঔষধি গুনেও ভরপুর !!
জবা ফুলের জন্ম ও প্রকারভেদঃ-(Birth and types of jaba flowers)-জবাফুরের গাছ বহু শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট একটি গুল্ম জাতীয় ফুলগাছ। এ ফুলের গাছটি বর্তমানে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে পাওয়া গেলেও মুলত এটি আমাদের দেশীয় ফুল নয়। উদ্ভিদ গবেষকদের মতামত ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়-মূলত এ ফুল গাছটির জন্ম চীনদেশে। বর্তমানে এ ফুল গাছ শুধু চীন বা বাংলাদেশেই নয়, মধ্য প্রাচ্যেও দেশ গুলোতেও হর-হামেশায় দেখা মেলে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ ধরনের জবা দেখতে পাওয়া যায়, এরমধ্যে ঝুমকো ও লঙ্কা জবা অন্যতম। এ ফুলটি লাল, সাদা, পাটকিলে, গোলাপি, হলুদ, কমলা, নীলচে ও নীলচে-বেগুনিসহ মিশ্র বর্ণেরও জবা দেখতে পাওয়া যায়।
জবা ফুল গন্ধহীন হলেও নানান ঔষধি গুনে ভরপুরঃ-(Although jaba flower is odorless, it is full of various medicinal properties)-বাহারী রঙ্গের এ মন মুগ্ধকর ফুলটি গন্ধহীন হলোও নানান জটিল ও কঠিন রোগ নিরাময়ে এর জুড়িমেলা ভার। এটি নিঃসন্দেহে একটি অতুলনীয় ঔষধি ফুল গাছ। আদিকাল থেকেই কবিরাজি মতে ও আয়ুবের্দীক শাস্ত্রে রোগ নিরাময়ে এর ব্যবহার চলে আসছে। বর্তমানে এটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতেও গবেষনা পূর্বক রোগ নিরাময়ে এ্যলোপ্যাথিক, ইউনানি, হারবাল ও হোমিওপ্যাথিক শাস্ত্রে রোগ নিরাময়ে এর ব্যবহার আসংখাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লিখিত চিকিৎসা শাস্ত্র পর্যালোচনায় জানা যায়-এটির ব্যবহারে নি¤œলিখিত রোগ সমুহ অনায়াসে নিরাময় সম্ভব-(১) চুল, দাড়ি, গোফ ও চোখের ভ্রæ পাতলা হলে জবাফুল বেটে নিয়মিত লাগালে আশ্চার্য্যজনক ফল পাওয়া যাবে। (২) শরীরের চামড়া উঠা রোগসহ যে কোন চর্মরোগে এ ফুলের রস লাগালে অসম্ভব ফল পাওয়া যায়। (৩) অতিরিক্ত আহারে অস্বস্তি ও অতিরিক্ত বমি বমি ভাব দেখা দিলে ৪-৫টি জবাফুল বেটে শরবত খেলে দ্রæত আরোগ্যলাভ হয়। (৪) ডায়াবেটিস জনিত মাত্রাতিরিক্ত প্রসাব হলে কয়েকদিন নিয়মিত জবাফুলের গাছের ছাল বেটে বেলা ১ চা চামুচ করে বেলা খেলে দ্রুত মাত্রাতিরিক্ত প্রসাব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। (৫) চোখেঁ কোন প্রকার সংক্রমন হলে জাবাফুলের রস ২-৩দিন কয়েক ফোটা করে লাগালে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়। (৬) মেয়েদের অনিয়মিত মাসিকের ক্ষেত্রে ২-৩টি পঞ্চমূখি জবাফুলের কুড়ি বেটে শরবত কওে কয়েকদিন খেলে দ্রুত তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। (৭) ঠান্ডাজনিত জ¦র হলে কয়েকটি জবাফুলের পাতা সিদ্ধ করে চা তৈরী করে কয়েকবার পান করলে দ্রæত তা নিয়ন্ত্রন হবে। (৮) সাদা জবার পাপড়ি সিদ্ধ করে সেই পানি পান করলে বিষন্নতা দুর হয়। (৯) লাল জবার সিদ্ধ পানি খেলে শরীরের অতিরিক্ত লৌহজনিত ঘাটতি কমায়। (১০) জবাফুলের পেষ্ট তৈরী করে মাথার তালুতে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল পাকা রোধ করা সম্ভব, এতে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম থাকায় মাথার ত্বকের পুষ্টিসহ চুলের গোড়া মজবুত ও সতেজ হওয়াসহ খুশকি রোধে খুবই কার্যকারি ভুমিকা রাখে। জবাফুল ঔষধের উপকরন হিসেবে অবশ্যই ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে, সেই সাথে ইহা সংরক্ষনের জন্য ফ্রিজ ব্যবহার করতে হবে।
জবাফুলের বানিজ্যিক চাষৎ-(Commercial cultivation of jaba flower)-জবাফুরের গাছ বিশেষ করে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় ও অন্যান্য ধর্মীয় বংশীও পরিবার গুলোতে শোভাবর্ধণের জন্য দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমানে ইহার ছাহিদা ও গুরুত্বেও কারনে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কিছু কিছু নার্সারিতে বানিজ্যিকভাবে জবাফুলের চাষ করা হচ্ছে। যা বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানিতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আবার অনেক ঔষধ কোম্পানি রয়েছে-তারা নিজেরাই নিজস্ব বাগানেই জবাফুলের চাষ করছেন।
লেখক/Author
Thursday, December 9, 2021
শিম (Bean) চাষে হচ্ছে কৃষকের অর্থনৈতিক মুক্তি !!
Saturday, December 4, 2021
গরুর গাড়ী ( Bullock cart) গ্রামীন জনপদের হারানো স্মৃতি!!
লোকজ সাংস্কৃতিতে গরুরগাড়ীঃ-(Bullock cart in folk culture)- মালামাল বহনের জন্য এ গাড়ীর সৃষ্টি হলেও পর্বতীতে লোকজ সাংস্কৃতিতে একমাত্র ঐতিহ্যবাহী বাহন হিসেবেই স্থান পায় এই গাড়ীটি। বিশেষ করে বিয়েসাদীতে টাবড়যুক্ত গরুগাড়ীতে গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে সারি সারিভাবে বরযাত্রী বোঝাই গাড়ীতে ঢোল-সানাই বাজিয়ে কনের বাড়ীতে যাওয়া, সে এক অন্য রকম দৃশ্য। গরুর গাড়ী ছাড়া বিয়ে যেন ঐতিহ্যবিহীন হয়ে যায়। গরুগাড়ির চালককে বলা হয় গাড়িয়াল। সেই গাড়ীয়ালকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চলে বিখ্যাত বিখ্যাত ভাওয়াইয়া শিল্পীগন রচিত করেছেন অসংখ্য গান। যা আজও হৃদয় স্পর্শ করে। যেমন-“ ওকি গাড়িয়াল ভাই, কত রহিম মুই পন্থের দিকে চাহিয়ারে” । বর্তমানে কালের বিবর্তনে নানা ধরনের মোটরযানের কারণে ধীর গতির এই যানটির ব্যবহার কমতে কমতে প্রায় বিলুপ্তি প্রায়। এখন মানুষ বিভিন্ন ধরণের প্রয়োজনীয় মালামাল বহনের জন্য ট্রাক, পাওয়ার টিলার, লরি, নসিমন-করিমনসহ বিভিন্ন মালগাড়ি ব্যবহার করছে। মানুষের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মোটরগাড়ি, রেলগাড়ি, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যান।
লেখক/Author
সাংবদিক অমিতাব বর্মণ।
ভেন্ডাবাড়ী, পীরগঞ্জ-রংপুর।
০৪-১২-২০২১ইং।
Tuesday, November 23, 2021
পান চাষে (Drink cultivation) অর্থ ও পানের ঔষধি গুন!!
পানঃ-
পানের ঔষধি গুনাগুণঃ-(Medicinal properties of the drink)-১. পান পাতা খাওয়ার ফলে যে রস উৎপাদন হয় তা আমাদের দাঁত আর মাড়ি সুস্থ রাখে। ২. পান পাতার রস আমাদের মুখের ভেতরটা পরিষ্কার রাখে, এমনকী মুখের মধ্যে রক্তপাতও বন্ধ করে, সান স্ট্রোক হওয়ার ফলে নাক দিয়ে রক্ত পড়লে পান পাতা পাকিয়ে তা নাকের মধ্যে গুঁজে দিয়ে, মাথা পিছনের দিকে হেলিয়ে রাখেলে কিছুক্ষণের মধ্যেই রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। ৩. কানের ব্যথা কমাতে কয়েক ফোঁটা পানের রস আর কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে কানের মধ্যে দিলে ব্যথা কমে যাবে। ৪. ছোটখাটো কাটা ছেড়ায় পান পাতা বেটে লাগিয়ে দিলে এটি এন্টিবায়োটিক এর কাজ করবে। ৫. গোসল করার পানিতে কিছুটা পান পাতার রস পািনতে মিশিয়ে গোসল করলে সারাদিন ফ্রেশ লাগবে। পান পাতা দিয়ে পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে সেই পানি পান করলে ঘামের গন্ধ কমাসহ পানে মহিলাদের মেনস্ট্রুয়েশন স্মেল ও কমানো সম্ভব। ৬. কিডনি রোগীরা দুধের সাথে পান পাতা বেটখেলে প্রস্রাবের কষ্ট থেকে আরোগ্য লাভ করবেন। পান পাতায় শরীর থেকে দ্রুত পানি বের করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে । ৭. পান পাতার রস সেবনে মহিলাদের প্রসস্থ্য যোনিপথ সংকুচিত করতে যথেষ্ট কাজ করে। ৮. কয়েক ফোটা পান পাতার রস আর কাঁচা হলুদ এক সঙ্গে বেটে নিয়ে কয়েকদিন স্কিন অ্যালার্জি‚ ফুসকুড়ি‚ কালো ছোপ‚ সান বার্নে লাগালে দ্রুত উপসম পাওয়া যাবে। ৯. মাথা ব্যথায় কয়েক ফোটা পান পাতার রস কপালে মালিশ করলে নিমিষেই আরোগ্য লাভ হবে। ১০. মহিলা /পুরুষের গোপনাঙ্গের আশে-পাশে ও পায়ের আঙ্গুলের ইনফেকশনে কয়েকদিন পানপাতার রস লাগালে দ্রুত আরোগ্য লাভ করবেন। ১১. মধুর সঙ্গে পান পাতা বেটে খালে শরীর ও মনের এনার্জি শক্তি বৃদ্ধি পায়। ১২. সরিষার তেল আর পান পাতার রস গরম করে বুকে লাগালে শীতে শরীর গরম থাকবে। পান পাতা‚ এলাচ‚ লবঙ্গ একসঙ্গে ফুটিয়ে খেলে সর্দিকাশিতে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়। ১৩. পান হজমে সাহায্য করাসহ গ্যাস‚ অম্বলও কমায়। ১৪. পান শরীরের ব্লাড সার্কুলেশন কমে গেলে তা বৃদ্ধিতে সহায়াতা করে। ১৫. পান খুদামন্দা দুরকরাসহ পেট ফাঁপা কমায়। ১৬. পান পাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে সংক্রমনের ভয় থাকেনা, এটি ব্যবহারে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়। পানের রসে বেদনানাশকের উপসম হয়। ১৭. নিয়মিত পরিমিত পানের সাথে সুপুরি, চুন, লবঙ্গ খেলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।
পান একটি অর্থকারি ফসলঃ-(Drink is a cash crop)-বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ভারত, সৌদিআরব, আরব-আমিরাত, ইংল্যান্ড, ইতালি, জার্মানি সহ এশিয়া-ইউরোপের আরও অনেক দেশে পান রপ্তানি করা হচ্ছে । বিদেশে রপ্তানীযোগ্য পান উৎপাদন হয় বাংলাদেশের নাটোর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা প্রভৃতি জেলায়। বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে ইউরোপে পান পাঠানো শুরু হয়। সৌদি আরবে পান পাঠানো হয় ১৯৯১ সাল হতে। বর্তমানে বাংরাদেশে একটি খিলিপান স্থান বিশেষে ৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্র হয়। বাংলাদেশের অনেক কৃষকেই পানচাষ করে বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয করছেন। বর্তমানে পানচাষে অধিক মুনাফা হওয়ায় অনেক বিত্তশালী কৃষক পানচাষের দিকে বিনিয়োগ করছেন, কারন কৃষিক্ষেত্রে বর্তমানে পানচাষে দ্রুত স্বাবলম্বী হওয়া যায।
লেখক/Author
সাংবাদিক অমিতাব বর্মণ।
ভেন্ডাবাড়ী, পীরগঞ্জ-রংপুর।